চার অভিষিক্ত খেলোয়াড় দেখে যতটা, তার চেয়ে বেশি চমকে যেতে হয়েছে একাদশে মুশফিকুর রহিমকে দেখে! কবজির চোটে পড়ে তাঁর খেলা নিয়েই ছিল সংশয়। মুশফিক খেলেছেন। শুধু খেলেননি, দুর্দান্ত খেলেছেন। মুশফিকের অপরাজিত ৬৬ রান বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোর।
টেস্ট-ওয়ানডেতে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠ করলেও টি-টোয়েন্টি কেন যেন মুশফিকের কাছে গোলকধাঁধা। সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৬২ টি-টোয়েন্টি খেলার রেকর্ডটা এখন তাঁর। অথচ আজকের ম্যাচের আগে তাঁর ফিফটি মাত্র একটি। ১৬.৮৪ গড় দেখে মুশফিক নিজেও অপ্রস্তুত বোধ করবেন! দলের অন্যতম ব্যাটিং ভরসার পরিসংখ্যান কেন এমন বিবর্ণ, সেটি এক গবেষণার বিষয়।
টি-টোয়েন্টির ধাঁধাটা মেলাতেই যেন মুশফিক আজ নামলেন। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের কঠিন অঙ্ক কষলেন স্বচ্ছন্দ, সাবলীল ব্যাটিংয়ে। কাভার ড্রাইভের মতো রানপ্রসবা শটে মুগ্ধ করলেন। কখনো বা শৌর্যের প্রদর্শনী প্রিয় স্লগ সুইপে। ফাইন লেগ অঞ্চলটা বাদে মাঠের চারদিকে ঘুরিয়ে খেললেন। অফ সাইডে এল ৩৫ রান, লেগে ৩১।
ধাঁধা মেলাতে পেরে ‘মুশি’ কতটা খুশি, বোঝা গেল ফিফটির পর তাঁর বুনো উদ্যাপন দেখে। যদিও উচ্ছ্বসিত উদ্যাপন তাঁকে প্রায়ই করতে দেখা যায়। কিন্তু এটির মাহাত্ম্য যে অন্যরকম—এই সংস্করণে ফিফটিটা এল পাঁচ বছর পর। ব্যাটকে তরবারি বানিয়ে ১৫০ স্ট্রাইকরেটে ৪৪ বলে অপরাজিত রইলেন ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ৬৬ করে।
মুশফিক সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছেন। তাঁর চেষ্টা সফল করার দায়িত্বটা বোলাররা ঠিকঠাক করতে পারছেন? না, পারেননি। উইকেটে বোলারদের জন্য কিছু ছিল না। তাই বলে এমন ছন্নছাড়া বোলিং! এমন পরিকল্পনাহীনতার ছাপ!
নিজের সর্বোচ্চ আর দলীয় সর্বোচ্চের দিনেও তাই মুশফিক পরাজিতের দলেই। টি-টোয়েন্টি খেলার ধাঁধাটা যে বেশির ভাগ সময়েই মেলাতে পারে না বাংলাদেশ।